কমলা চাষে লাভবান কৃষক, বাগান দেখতে হাজারো মানুষে ভিড় 

ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে দার্জিলিং জাতের কমলা বাগান করে লাভবান হয়েছেন আবু জাহিদ ইবনুল ইরাম জুয়েল নামে এক কৃষক। বাগানের প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে প্রচুর। ভারতীয় জাতের এ ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে। এছাড়াও বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছেন।

জানা যায়, দশ বছর আগে হর্টিকালচার থেকে কয়েকটি চারা ক্রয় করে জমিতে রোপন করে জুয়েল। এখন বাগানে প্রায় ৩০০টি কমলা গাছ রয়েছে। উৎপাদিত বাগানের এসব ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদা পুরণ করে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতি বছর বাগানের পরিধি বাড়ায় কর্মসংস্থানের সৃস্টি হয়েছে অনেকের। নভেম্বর মাস থেকে বাগানের কমলা বিক্রি শুরু করেন বাগান মালিক। বাগানের প্রতিটি গাছে ৮০০/৯০০ কমলা ধরেছে। প্রতি কেজি কমলা বিক্রি করছেন ১৫০-২০০ টাকা দরে।

বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, শহর থেকে এসেছি কমলা বাগান দেখতে। আমরা দার্জেলিং এ বাগান দেখেছি। কিন্তু এখানে কমলা বাগান যে সুন্দর তা দার্জেলিং এর বাগানকেও হার মানাবে। পুরো বাগানে কমলা ঝুলে রয়েছে। দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে। কমলা খেয়ে মনে হল না যে আমার দেশের মাটিতে উৎপাদিত কমলা খাচ্ছি।

বাগান মালিক জুয়েল বলেন, এই বাগান থেকেই এবার দশ হাজার মেট্রিকটন কমলা উৎপাদন হবে আশা করছি। আমার বাগানের বয়স প্রায় ১০ বছর। তিন বছর পর থেকেই ফলন আসা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বাগান দেখতে আসে। তবে কৃষকরা যদি এভাবে কমলার বাগান করতে এগিয়ে আসে তাহলে কৃষিতে একটা বিপ্লব ঘটবে। আর কমলা দেশের বাহির থেকে আনতে হবে না। আমাদের দেশের কমলা দিয়েই ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হবে বলে আমি মনে করছি।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় ৭৩ হেক্টর জমিতে মালটা ও কমলার বাগান রয়েছে এক হাজার বত্রিশটি। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী উপজেলার পীরগঞ্জ ও হরিপুরে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের সাতটি কমলা বাগান গড়ে উঠেছে। জেলায় অনেকেই কমলার বাগান করলেও জুয়েল ছাড়া অন্যরা দার্জিলিং জাতের কমলার চাষ ভালোভাবে করতে পারেননি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন জানান, বছর দশেক আগে সরকার একটি প্রকল্প নেয়। সেটাই ঠাকুরগাঁওয়ে কমলা চাষের শুরু। জুয়েল কৃষি দপ্তর থেকে সবসময় পরামর্শ নিয়েছেন। তার দার্জিলিং জাতের বাগানটি বেশ সুন্দর হয়েছে এবং বাগানে প্রচুর পরিমাণ কমলা ধরেছে। তার বাগান দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন বাগান করার জন্য।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জিএস